Matthew Langford Perry The great Chandler Bing
নেট দুনিয়ায় এই মুহুর্তে সবচেয়ে আলোচিত নাম, Chandler Bing! কে এই চ্যান্ডেলার বিং, যার মৃত্যুতে শোকে মূহ্যমান পুরো বিশ্বের সিনেমাপ্রেমীরা!
American NBC television এর Sitcom ‘Friends’ সিরিজের একটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র ‘চ্যান্ডলার বিং’ ! একটি কাল্পনিক চরিত্র কিভাবে পুরো তরুণ সমাজকে এতটা প্রাসঙ্গিকভাবে পর্দায় তুলে ধরতে পারে তা এই সিরিজটি না দেখলে বোঝা সম্ভব না! ‘ফ্রেন্ডস’ সিরিজটি খুবই সাদামাটা সাধারণ একটি গল্প। New York শহরে বসবাসরত ৬ জন তরুণ-তরুণী’র দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ সব মজার ঘটনা নিয়েই ‘Friends’ এর গল্প! এই ছয়জন চরিত্রের মধ্যে একজন হলো এই Chandler Bing!
চ্যান্ডলার বিং কেন এত প্রাসঙ্গিক? – এই প্রশ্নের উত্তরে বলতে হবে, চ্যান্ডলার এমন একটি চরিত্র, যা সমাজে পুরুষদের সকল প্রতিবন্ধকতাকে উপস্থাপন করে। চ্যান্ডলার জীবনের কোন অংশেই স্বাভাবিকতা বা ইতিবাচকতার সম্মুখীন হয়নি। তার বাবা-মা’র মধ্যকার ডিসফাংশনাল সম্পর্ক, দীর্ঘ সময় বেকারত্বে ভোগা সবকিছুই যেন প্রতিটি সাধারণ পুরুষের জীবনকে প্রতিনিধিত্ব করে। সেটা তার ধূমপানের সমস্যা, অথবা নিজেকে সঠিকভাবে প্রকাশ করতে না পারার দূর্বলতা কিংবা ‘জ্যানিস’ নামক মেয়েটির সাথে তার টক্সিক সম্পর্ক, কোন জায়গাতেই চ্যান্ডলারের স্বস্তি ছিলো না!
আরো পড়ুন
শুধুমাত্র অসাধারণ গায়কই নয় একজন অসাধারণ ফটোগ্রাফার ও
কিন্তু, তারপরও চ্যান্ডলার দমে যায়নি, পারিপার্শ্বিক সমস্যাগুলো নিয়ে হতাশও হয়নি, নিজের অসাধারণ সেন্স অফ হিউমার দিয়ে সবসময় নিজেকে সবল রেখেছে! আমেরিকান টিভি পর্দার এই চরিত্রটি পুরো দুনিয়াকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে জীবনে খুশি থাকার মূলমন্ত্র হলো জীবনের সমস্যাগুলোকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ করে না তোলা! জীবনের সমস্যাগুলোকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ করে তুললে জীবন আরো বেশি জটিলতার মধ্যে আবদ্ধ হয়ে যায়। সমস্যায় ভরপুর জীবনকেই বরং উপভোগ করতে জানতে হয়, সেটি একা হোক অথবা বন্ধুদের সাথে! নিজের দুঃখকে লুকিয়ে রেখেও হাসি ফুটিয়ে তুলতে হয় চারপাশের মানুষের মুখে, এটাই ছিলো চ্যান্ডেলার বিং চরিত্রটির মূলমন্ত্র। চ্যান্ডলার বিং চরিত্রটি তার এই অসাধারণ ব্যক্তিত্ব আর সার্কাস্টিক মেজাজের কারনেই পুরো পৃথিবীজুড়ে এতো বিখ্যাত!
ঠিক একই কথাগুলো প্রযোজ্য চ্যান্ডলার বিং চরিত্রে অভিনয় করা স্বয়ং ম্যাথিউ পেরির ক্ষেত্রে। নিজের অভিনীত একটি সাধারণ চরিত্র দিয়ে পুরো দুনিয়াকে হাসিয়েছেন তিনি, কিন্তু নিজের দুঃখগুলো সবসময় আড়ালেই রয়ে গেছে ! ABC TV – র একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাথিউ সবসময়েই চাইতেন মানুষ যাতে তাকে পছন্দ করে সেজন্য যা করার করতে তিনি রাজি ছিলেন! নিজের একাকিত্বকে ভোলার জন্য তিনি যে কোন কিছু করতে সদাপ্রস্তুত ছিলেন! ‘ফ্রেন্ডস’ সিরিজটি তাকে আকাশচুম্বী সফলতা তো দিয়েছিল, কিন্তু সেই গোপনে লুকিয়ে রাখা কষ্টগুলোকে পুরোপুরি মুছে ফেলতে পারেনি। তাই বোধহয় জীবনের মাত্র ৫৪তম বসন্তেই তাকে চলে যেতে হলো ওপারে, আর দুঃখজনক বিষয় হলো মৃত্যুর ঠিক আগে মুহুর্তেও তিনি ছিলেন একা! যে অভিনয় দিয়ে পুরো পৃথিবীকে এক করে দিয়েছিলেন, তাকেই চলে যেতে হলো একাকী মুহুর্তে। জীবনের সবচেয়ে বড় কৌতুক হয়তো এটাই!
কিন্তু, তার মানে এই না যে কেউ হতাশ হয়ে বেঁচে থাকা ছেড়ে দেবে, আজ ম্যাথিউ পেরি হয়তো নেই কিন্তু তার ক্লাসিক চরিত্র চ্যান্ডলার সবসময়েই ভক্তদের মাঝে জীবন্ত থাকবে। নিউ ইয়র্ক শহরের রাস্তা, সেন্ট্রাল পার্ক কফি শপ, এমনকি চ্যান্ডলার আর মনিকার ফ্ল্যাট; সবকিছুতেই যেন চ্যান্ডলার এখনো জীবন্ত! এখনো হয়তো সেখানে গেলে শোনা যাবে,
Rest In Peace dear Chandler Bing!