অপূর্ণ রুবেলের ‘সুতো’ এক অসাধারণ গল্পের মায়াবী জাল
নাটকের নামটা যেমন দারুণ গল্পটাও ভারি চমৎকার। নামের মাধ্যমে, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সম্পর্কের ভাঙা-গড়াকে একটি শব্দে দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। জামার বাঁধন ছিড়ে গেলে যেমন সুতোয় টান পড়ে ঠিক তেমনি মানুষের জীবনের মায়া কেটে গেলেও সম্পর্কের সুতোয় টান পড়ে। জীবনের যে মানুষটার সুবাসের গন্ধে পথচলা শুরু হয় সেই প্রিয় ও ঘনিষ্ঠ মানুষগুলোও ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়।
সম্পর্কের ভাঙন মানুষকে কাদায়, ভিতর থেকে মৃত লাশ বানিয়ে ফেলে যার কারণে মানুষ শুরু করে ছটফট। মনের ডানা এলোমেলোভাবে ঝাঁপটানো শুরু করে। আমাদের জীবনে তখন প্রগাঢ়ভাবে হাজির হয় অতীত স্মৃতি, রোমন্থন শুরু হয় টুকরো টুকরো যাপিত ছেঁড়া ছেঁড়া মুহুর্তগুলো। মায়ার বাধনে আটকে থেকে আমরা বাস্তবতা ভুলে যাই। আমরা যখন বাস্তবতায় ফিরে আসি তখন আমাদের সবচেয়ে প্রয়োজন হয় সেই কাছের মানুষটাকেই।
অপূর্ণ রুবেল এককথায় অসাধারণ ও অনবদ্য গল্প বুনেছেন। এ এমন এক গল্প এ যেন আমাদের আশেপাশেই প্রতিনিয়ত দৃশ্যমান জীবন প্রেক্ষাপট। যে গল্পে আমাদের আশপাশের এমন হাজারো সংসার ভাঙ্গা-পোড়ার ঘ্রাণ পাওয়া যায়। বৈবাহিক বিচ্ছেদ বা ডিভোর্স যে কতটা ভয়াবহ প্রভাব ফেলে মন-মানসিকতায়, মানসিকভাবে একজন মানুষকে কতটা কঠিন করে তোলে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
স্বামী-সন্তান কিংবা প্রিয়তমা স্ত্রী আমাদের মায়ার সুতোয় বেধে রাখে, আটকে রাখে আমাদের। নাটকটিতে ডিভোর্সের নেতিবাচক দিকের পাশাপাশি সুনিপুণভাবে বর্তমান ভালোবাসায় গড়ে উঠা সম্পর্কের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে। অপূর্ণ রুবেল মায়ার বাঁধনে হাবুডুবু খাওয়া মানুষটিকে আমাদের বর্তমানে যে ফিরতে হয়, সেটা নৈপুণ্যেতার সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন গল্পে।
পরিচালক ইমরাউল রাফাত তাঁর পরিচালনায় ও চিত্রনাট্যে দারুণ মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। নাটকের নির্মাণ যেমন নিখুঁত তেমন প্রশংসনীয়। নাটকের প্রতিটি চরিত্রের অভিনয় হৃদয় শীতল করার মতো। সাবিলা নূরেরর অতুলনীয় অভিনয় দক্ষতা এবং ইরেশ যাকেরের অভিজ্ঞতায় ভরপুর অভিনয় ব্যাপক আলো ছড়িয়েছে নাটকটিতে। পাশাপাশি পার্থ শেখের চমৎকার ও সহজ সাবলীল অভিনয় ছিল দেখার মতোন। বাচ্চা মেয়েটাও চমৎকার অভিনয় করেছে, ভারি মিষ্টি ছিল তাঁর ডায়ালগগুলো।
Suto Bangla Natok